ক) দৈনন্দিন সালাত
দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করা ফরজ। ফরজের পাশাপাশি প্রত্যেক ওয়াক্তেই ওয়াজিব, সুন্নাত এবং নফল সালাত রয়েছে।
সালাতুল ফজর
ফজরে প্রথমে দুই রাকাআত সুন্নাত এবং পরে দুই রাকাআত ফরজ।
সালাতুল জোহর
যুহরের সালাতের প্রথমে চার রাকাআত সুন্নাত। তারপর চার রাকাআত ফরজ এবং তারপর দুই রাকাআত সুন্নাত। এ দশ রাকাআত পড়া উত্তম। কেউ কেউ সর্বশেষ দুই রাকআত নফল সালাতও পড়ে। এ হিসেবে জোহরের সালাত ১২ রাকাআত আদায় করা হয়।
সালাতুল আসর
আসরের সালাত চার রাকাআত পড়া ফরজ। কেউ কেউ ফরজের পূর্বে চার রাকাআত সুন্নাত সালাত পড়ে থাকে।
সালাতুল মাগরিব
মাগরিবে প্রথম তিন রাকাআত ফরজ। তারপর দুই রাকাআত সুন্নাত। কেউ কেউ সুন্নাতের পর দুই রাকাআত নফল পড়ে থাকে।
সালাতুল ইশা
ইশার সালাত চার রাকাআত ফরজ। তারপর দুই রাকাআত সুন্নাত। অতপর এক/তিন/পাঁচ/সাত/নয় রাকাআত বিতর। বিতর পড়া ওয়াজিব। অনেকে ফরজের পূর্বে চার রাকাআত সুন্নাত এবং বিতরের পর দুই রাকাআত নফল সালাতও পড়ে থাকে।
পরিশেষে
সমগ্র মুসলিম উম্মাহকে ফজর ৪ রাকাআত; জোহর ১০ রাকাআত; আসর ৪ রাকাআত, মাগরিব ৫ রাকাআত এবং ইশার ৯ রাকাআত সালাত যথাযথ আদায়ে যত্নবান হওয়া আবশ্যক। পাশাপাশি প্রত্যেক ওয়াক্তের আগে পরের সুন্নাত ও নফল আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
খ) জুমুয়ার সালাত
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا نُودِي لِلصَّلَاةِ مِن يَوْمِ الْجُمُعَةِ فَاسْعَوْا إِلَى ذِكْرِ اللَّهِ وَذَرُوا الْبَيْعَ ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ
‘মুমিনগণ, জুমার দিনে যখন সালাতের আজান দেয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহ্র স্মরণের পানে ত্বরা কর এবং বেচাকেনা বন্ধ কর। এটা তোমাদের জন্যে উত্তম যদি তোমরা বুঝ।’ (সূরা: আল জুমা, আয়াত: ৯)
জুমার সালাত একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এ সালাত ছেড়ে দিলে হাদিসে ভয়াবহ ক্ষতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এ জন্য প্রতিটি মুসলিমকে অবশ্যই জুমার সালাত গুরুত্বসহ পড়া উচিত।
গ) দুই ঈদের সালাত
মুসলমানদের ঈদ দুটি: একটি হলো রমজানের পর ঈদুল ফিতর। অপরটি হলো আরাফা দিবসের পর ঈদুল আযহা। জাহিলীযুগের উৎসব-পার্বন ও নব আবিষ্কৃত উৎসব-পার্বনের জায়গায় আল্লাহ্ তা’আলা এ দুই ঈদ বিধিবদ্ধ করে দিয়েছেন। আনাস ইবনে মালিক রাযি. বলেন, জাহিলীযুগে বছরে দুটি দিবস ছিল যেখানে তারা খেল-তামাশা করত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন মদীনায় এলেন, তিনি বললেন, «তোমাদের দুটি দিবস ছিল, যাতে তোমরা খেলতে। আল্লাহ্ তা’আলা ওই দুটি পরিবর্তন করে তোমাদের জন্য উত্তম দিবস দিয়েছেন: ঈদুল ফিতর দিবস ও ঈদুল আযহা দিব, (বর্ণনায় নাসায়ী) অতএব কাফিরদের ঈদে অংশ নেয়া বৈধ নয়; কেননা তা কোনো ধর্ম, বিধান বা জীবন পদ্ধতির স্পষ্টতম গুনাহ। আল্লাহ তাআলা বলেন:
(وَلَا تَتَّبِعۡ أَهۡوَآءَهُمۡ عَمَّا جَآءَكَ مِنَ ٱلۡحَقِّۚ لِكُلّٖ جَعَلۡنَا مِنكُمۡ شِرۡعَةٗ وَمِنۡهَاجٗاۚ )
দুই ঈদের নামাজের হুকুম
ঈদের সালাত ওয়াজিব। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ সালাত পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এমনকি তিনি নারী, শিশু ও বৃদ্ধদেরকেও ঈদের সালাতে নিয়ে যেতে নির্দেশ দিয়েছেন। এমনকি হায়েযগ্রস্ত নারীদেরকেও ঈদের মাঠে নিয়ে যেতে বলেছেন, যদিও তারা সালাত পড়বে না। তারা এ ভালো কর্ম ও মুসলমানদের দু’আয় হাজির হবে।
ঈদের সালাত ওয়াজিব হওয়ার দলিল:
আল্লাহ্ তাআলার বাণী:
(فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَٱنۡحَرۡ ٢)
{অতএব তোমার রবের উদ্দেশ্যেই সালাত পড় এবং নহর কর} [সূরা আল কাউছার:২]
ঈদের সালাত আদায় পদ্ধতি
ঈদের সালাত দু রাকাত, যাতে আযান ইকামত নেই। ইমাম ব্যতীত একা একা ঈদের সালাত পড়ার কোন অবকাশ নাই অর্থাৎ জামাতের সাথে পড়তে হবে। ঈদের সালাতের কিরাত প্রকাশ্যে পড়তে হয়। ঈদের নামাজ আদায় পদ্ধতি হলো নিম্নরূপ:
২. প্রথম রাকাতে তাকবীরে তাহরিমা, ছানা পাঠ, আউযুবিল্লাহ পাঠ ও কিরাত পড়ার পর ছয় তাকবীর দেবে।
৩. আউযুবিল্লাহ ও বিসমিল্লাহ পড়ার পর সূরা ফাতিহা পড়ে এর সাথে অন্য একটি সূরা মিলাবে। সুন্নত হলো সূরা ফাতিহার পর সূরা আল আ’লা পড়া। আর দ্বিতীয় রাকাতে সূরা আল গাশিয়া পড়া। অথবা প্রথম রাকাতে সূরা ক্বাফ পড়া ও দ্বিতীয় রাকাতে সূরা আল কামার পড়া।
৪. দ্বিতীয় রাকাতে কিরাত পড়া শেষে রুকুতে যাওয়ার পূর্বে অতিরিক্ত পাঁচ তাকবীর দেবে। প্রতি তাকবীরের সাথে হাত উঠাবে।
৫. তাকবীরগুলোর মাঝে আল্লাহ তাআলার প্রশংসা করবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি দরুদ পড়বে।
৬. সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করার পর ইমাম মিম্বারে উঠবে। দুটি খুতবা দেবে। এ দুটির মাঝে সামান্য সময়ের জন্য বসবে। প্রথম খুতবা নয় তাকবীরের সাথে শুরু করবে। আর দ্বিতীয় খুতবা সাত তাকবীরের সাথে শুরু করবে।
৭. ঈদুল ফিতরে মুস্তাহাব হলো মানুষদেরকে সদকায়ে ফিতর সম্পর্কে স্মরণ করিয়ে দেয়া। আর ঈদুল আযহায় কুরবানীর হুকুম আহকাম বিষয়ে স্মরণ করিয়ে দেয়া।
ঈদের নামাজ আদায়ের জায়গা
ঈদের নামাজ মসজিদে নয় বরং মাঠে পড়া সুন্নত। প্রয়োজনে যদি মসজিদে পড়া হয় তবে কোনো সমস্যা হবে না।
ঈদের নামাজের মুস্তাহাবসমূহ
১. ইমাম ব্যতীত অন্যান্য মুসুল্লীরা সকাল সকাল ঈদগাহে আসবে এবং প্রথম কাতারের দিকে আগাবে।
২. যদি সম্ভব হয় তাহলে পায়ে হেঁটে এক পথে যাবে এবং অন্য পথে ফিরে আসবে। জাবির রাযি. বর্ণনা করে বলেন, «ঈদের দিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যাওয়া-আসার রাস্তায় পার্থক্য করতেন।» [বর্ণনায় বুখারী]
৩. ঈদুল ফিতরের নামাজের উদ্দেশে বের হওয়ার পূর্বে বেজোড় সংখ্যায় খেজুর খাওয়া (তিনটি অথবা পাঁচটি)। আর ঈদুল আযহায় নামাজ থেকে ফিরে আসার পূর্বে কিছু না খাওয়া|
ঈদুল ফিতরের নামাজ দেরিতে আদায় করা মুস্তাহাব; যাতে মানুষ সদকায়ে ফিতর আদায় করতে ও হকদারদের কাছে তা পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়। পক্ষান্তরে ঈদুল আযহার নামাজ সকাল-সকাল আদায় করা মুস্তাহাব|
দুই ঈদের আহকাম
১. ঈদগাহে, ঈদের নামাজের পূর্বে ও পরে, নফল নামাজ পড়া মাকরুহ। কিন্তু যদি ঈদের নামাজ মসজিদে আদায় করা হয়, তাহলে মসজিদে প্রবেশের সময় তাহিয়াতু মসজিদ পড়া শুদ্ধ রয়েছে।
২. যে ব্যক্তির ঈদের নামাজ পুরোটা বা অংশত ছুটে গেল তার জন্য সুন্নত হলো ঈদের নামাজের আদায় পদ্ধতি অবলম্বন করে তা কাযা করে নেয়া। অর্থাৎ
অতিরিক্ত তাকবীরসহ দু রাকাত ঈদের নামাজ আদায় করা। যে অংশ ছুটে গেল সে অংশও ঈদের নামাজের আদায় পদ্ধতি অনুসরণ করে আদায় করে পূর্ণ করে নেয়া।
৩. রমজান শেষে আল্লাহ তাআলা তার বান্দাদের উপর তাকবীর তথা আল্লাহর বড়ত্ব ঘোষণার বিধান রেখেছেন। আল কুরআনে ইরশাদ হয়েছে:
(شَهۡرُ رَمَضَانَ ٱلَّذِيٓ أُنزِلَ فِيهِ ٱلۡقُرۡءَانُ هُدٗى لِّلنَّاسِ وَبَيِّنَٰتٖ مِّنَ ٱلۡهُدَىٰ وَٱلۡفُرۡقَانِۚ فَمَن شَهِدَ مِنكُمُ ٱلشَّهۡرَ فَلۡيَصُمۡهُۖ وَمَن كَانَ مَرِيضًا أَوۡ عَلَىٰ سَفَرٖ فَعِدَّةٞ مِّنۡ أَيَّامٍ أُخَرَۗ يُرِيدُ ٱللَّهُ بِكُمُ ٱلۡيُسۡرَ وَلَا يُرِيدُ بِكُمُ ٱلۡعُسۡرَ وَلِتُكۡمِلُواْ ٱلۡعِدَّةَ وَلِتُكَبِّرُواْ ٱللَّهَ عَلَىٰ مَا هَدَىٰكُمۡ وَلَعَلَّكُمۡ تَشۡكُرُونَ ١٨٥ )
{আর যাতে তোমরা সংখ্যা পূরণ কর এবং তিনি তোমাদেরকে যে হিদায়াত দিয়েছেন, তার জন্য আল্লাহর বড়ত্ব ঘোষণা কর।}
[সূরা আল বাকারা:১৮৫]৪. উক্ত আয়াতে, তুকাব্বিরুল্লাহা এর অর্থ তোমরা যেন তোমাদের হৃদয় থেকে এবং জিহ্বা দিয়ে আল্লাহর বড়ত্বের ঘোষণা করো। নিম্নবর্ণিত শব্দমালা দ্বারা ঈদের মুহূর্তে আল্লাহর বড়ত্বের ঘোষণা তথা তাকবীর দিতে হয়:
الله أكبر، الله أكبر، لا إله إلا الله، والله أكبر، الله أكبر، ولله الحمد
৫. পুরুষদের জন্য উঁচু আওয়াজে তাকবীর দেয়া সুন্নত। আর নারীরা দেবে গোপনে। কেননা নারীদেরকে আওয়াজ নিচু রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
৬. তাকবীর শুরু হবে ঈদের রাতে সূর্যাস্তের পর থেকে ঈদের নামাজ শুরু হওয়া পর্যন্ত। সূর্যাস্তের পর থেকে তাকবীর শুরু হবে যদি পরদিন ঈদ হবে বলে সূর্যাস্তের পূর্বেই নিশ্চিত হওয়া যায়, যেমন রমজান মাস ত্রিশ দিন পূর্ণ হয়ে গেল অথবা ঈদের চাঁদ উঠার ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া গেল।
কিছু দিকনির্দেশনা
১. ঈদের সময় মুসলমানদের মাঝে পরস্পর শুভেচ্ছা বিনিময় মুস্তাহাব।
২. ঈদে আনন্দিত হওয়া এবং আনন্দ প্রকাশ করা মুস্তাহাব। আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধব ও মুসলিম ভাই বেরাদরকে শুভেচ্ছা বিনিময়ও মুস্তাহাব।
৩. ঈদ একটি সুযোগ, যা আত্মীয়তা-সম্পর্ক জোড়া লাগানো এবং যাদের মধ্যে ঝগড়া হচ্ছে তাদেরকে মিলিয়ে দেয়ার সর্বোত্তম সময়।
৪. ঈদে কবর যিয়ারত করা শরীয়তসম্মত নয়। ঈদের আনন্দের সাথে, তা বরং সাংঘর্ষিক।
ঈদে পরিবারের সদস্যদের জন্য ভালো খাবার ও কাপড় চোপড় ও বৈধ বিনোদনের ব্যবস্থা করা জায়েয। ঈদ হলো খুশি-আনন্দের উপলক্ষ। আল্লাহ তাআলা আনন্দ প্রকাশকে নিষিদ্ধ করেননি। ইরশাদ হয়েছে:
( قُلۡ بِفَضۡلِ ٱللَّهِ وَبِرَحۡمَتِهِۦ فَبِذَٰلِكَ فَلۡيَفۡرَحُواْ هُوَ خَيۡرٞ مِّمَّا يَجۡمَعُونَ ٥٨ )
{বল, «আল্লাহর অনুগ্রহ ও রহমতে। সুতরাং এ নিয়েই যেন তারা খুশি হয়»। এটি যা তারা জমা করে তা থেকে উত্তম।} [সূরা ইউনুস:৫৮]
কাফিরদের ঈদ-পর্বে শুভেচ্ছা জানানো
কাফিরদের ঈদ-পর্বে শুভেচ্ছা জানানো মুসলমানদের জন্য জায়েয নয়; কেননা এর দ্বারা কুফরের নিদর্শনকে মেনে নেয়া হয়। কাফিরদের ঈদ-পার্বনের স্থানসমূহে গমন এবং তাদের আনন্দে অংশ নেয়া বৈধ নয়।
ঘ) জানাজার সালাত
জানাযার নামাজ ফরজে কিফায়া। এ নামাজ মুসল্লিদের জন্য সাওয়াব বর্ধন এবং মৃত ব্যক্তির জন্য সুপারিশ। জানাযায় লোক সংখ্যা বেশি হওয়া মুস্তাহাব এবং মুসল্লি সংখ্যা যত বাড়তে ততই উত্তম। তবে কাতার বেজোড় হওয়া উত্তম। জানাযার নামাজ মূলত মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া ও ইস্তেগফার। জানাযার নামাজ পড়ার পদ্ধতি তুলে ধরা হলো-
১. প্রথমত মৃত ব্যক্তিকে ক্বিবলার দিকে সম্মুখে রেখে ইমাম ও মুসল্লিদের দাঁড়ানো।
২. মুসল্লীরা নামাজের অজুর ন্যায় অজু করে ইমামের পিছনে ক্বিবলামুখী হয়ে দাঁড়ানো।
৩. মৃত ব্যক্তি পুরুষ হলে ইমাম তার মাথার পাশে দাঁড়ানো। আর মহিলা হলে কফিনের মাঝ বরাবর দাঁড়ানো। মৃত ব্যক্তির মাঝ বরাবর দাঁড়ানোতে কোনো দোষ নেই।
৪. জানাযার নিয়ত করে চার তাকবিরের সহিত নামাজ আদায় করা।
৫. কাঁধ বা কানের লতি পর্যন্ত দু’হাত উত্তোলন করে আল্লাহু আকবার বলে নিয়ত বাঁধা।
৬. অন্যান্য নামাজের ন্যায় ডান হাত বাম হাতের উপর রাখা।
৭. ছানা পড়া (কেউ কেউ সুরা ফাতিহা পড়ে অন্যান্য সুরা মিলানোর কথা উল্লেখ করেছেন।)
৮. দ্বিতীয় তাকবিরের পর দরূদে ইবরাহিম পড়া।
৯. তৃতীয় তাকবির দিয়ে ইখলাসের সঙ্গে হাদিসে বর্ণিত দোয়াসমূহের মাধ্যমে মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া করা।
১০. চতুর্থ তাকবির দিয়ে যথাক্রমে ডানে ও বামে সালাম ফিরানোর মাধ্যমে জানাযার নামাজ শেষ করা।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে মৃত ব্যক্তির মাগফিরাত কামনায় এবং নিজেদের সাওয়াব বৃদ্ধিতে সুন্দরভাবে জানাযার নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
উম্ম) বিতিরের সালাত
রাসুল (সা.) তিন রাকাত বিতর সালাত পড়তেন, এই মর্মে সহিহ রেওয়াত সাব্যস্ত হয়েছে। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, রাসুল (সা.) তিন রাকাতের মাধ্যমে বিতরের সালাত আদায় করতেন। সুতরাং, আপনি তিন রাকাত আদায় করতে পারেন।
আয়েশা (রা.) এই তিন রাকাত সালাতের বৈশিষ্ট্য বা ধরন উল্লেখ করে দিয়েছেন। সেটা হলো, রাসুল (সা.) দ্বিতীয় রাকাতে বসতেন না। দ্বিতীয় রাকাতে সালামের জন্য বা তাশাহুদের জন্য অথবা কোনো কিছুর জন্য রাসুল (সা.) বসতেন না। তিনি শেষ রাকাতে বসতেন। এই রেওয়াত থেকে বোঝা যায় যে, রাসুল (সা.) তিন রাকাত একসঙ্গে পড়তেন, মাঝখানে বসতেন না, তৃতীয় রাকাতে রাসুল (সা.) বসতেন এবং সালাম ফেরাতেন।
বিতরের সালাতের ধরন নিয়ে আলেমদের মধ্যে দীর্ঘ বক্তব্য রয়েছে। আলেমগণ বিতরের সালাতের ছয়টি ধারা উল্লেখ করেছেন, যা থেকে বিতরের সালাত আদায় করা যায়। এ থেকে আমরা একটি ধারা উল্লেখ করলাম, সেটা হলো, আপনি যদি তিন রাকাত আদায় করতে চান, তাহলে তিন রাকাত একসঙ্গে আদায় করবেন।
তিন রাকাতের আরেকটি পদ্ধতি হচ্ছে, দুই রাকাত একসঙ্গে আদায় করবেন। দ্বিতীয় রাকাতে সালাম ফিরিয়ে তারপর দাঁড়িয়ে যাবেন। এরপর আরেক রাকাত আদায় করবেন। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা) থেকে সহিহ সনদে এটি সাব্যস্ত হয়েছে। সুতরাং এভাবেও আদায় করা জায়েজ রয়েছে।
চ) অন্যান্য সালাত
নফল সালাত যা সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত সময় ব্যতিত যে কোন সময় পড়া যায়, দু’রাকাত করে পড়ার নিয়ম।
About Post Author